৮ম শ্রেণি । বিজ্ঞান । এ্যাসাইনমেন্ট
নিধিতাদের বাগানে পেয়ারা গাছে পানি দিতে গিয়ে দেখল, ছোট পেয়ারা গাছটি ছয় মাসে অনেক লম্বা হয়েছে। সে তার মায়ের কাছে জানল, কোষ বিভাজনের কারনে এমন হয়েছে। পরে মা গাছটিতে কিছু জৈব সার প্রয়োগ করলেন। মেয়ে মাকে জিজ্ঞেস করল, “মা, তুমি মাটিতে সার দিচ্ছ, কিন্তু তা পাতায় পৌঁছাবে কী করে”। মা জানালেন “এক বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে”।
১. ক. কোষ বিভাজন কাকে বলে?
খ. মিয়োসিস কোষ
বিভাজনকে হ্রাস মূলক বিভাজন বলা হয় কেন? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত বিভাজন প্রক্রিয়ার দীর্ঘস্থায়ী ধাপটি উদ্ভিদের
বৃদ্ধিতে কিভাবে ভূমিকা রাখে - ব্যাখ্যা কর ?
ঘ. মায়ের উত্তরে
বলা বিশেষ প্রক্রিয়াটির গুরুত্ব উদ্ভিদের জীবনে কত খানি তা ব্যাখ্যা কর।।
১
নং প্রশ্নের উত্তর
– ক
যে
প্রক্রিয়ায় জীব কোষের বিভক্তির মাধ্যমে একটি থেকে দুটি বা চারটি কোষের সৃষ্টি
হয় তাকে কোষ বিভাজন বলে ।
১
নং প্রশ্নের উত্তর
– খ
যে
ধরনের কোষ বিভাজনে ক্রোমোজোমের সংখ্যা হ্রাস পায় তাকে হ্রাসমূলক বিভাজন বলে। মিয়োসিস
কোষ বিভাজনে মাতৃকোষের নিউক্লিয়াসটি পরপর দুইবার বিভাজিত হলেও ক্রোমোজোম বিভাজিত হয়
মাত্র একবার। ফলে অপত্য কোষে ক্রোমোজোম সংখ্যা মাতৃকোষের ক্রোমোজোম সংখ্যার অর্ধেক
হয়ে যায়। তাই মিয়োসিস কোষ বিভাজনকে
হ্রাসমূলক বিভাজন বলে।
১
নং প্রশ্নের উত্তর
– গ
উদ্দীপকে
উল্লেখিত বিভাজন প্রক্রিয়ার দীর্ঘস্থায়ী ধাপটি হল প্রোফেজ। প্রোফেজ
মাইটোসিস কোষ বিভাজনে ক্যারিওকাইনেসিসের প্রথম ধাপ।
উদ্ভিদের
বৃদ্ধিতে প্রোফেজ ধাপের ভূমিকা:
এ
ধাপে কোষের নিউক্লিয়াস আকারে বড় হয়।
পানি বিয়োজনের ফলে নিউক্লিয়াস জালিকা ভেঙ্গে গিয়ে কতগুলো
নির্দিষ্ট সংখ্যক আকাঁবাকা সূতার মতো অংশের সৃষ্টি হয়। এগুলোকে
ক্রোমোজোম বলে।
এরপর প্রতিটি ক্রোমোজোম লম্বালম্বিভাবে বিভক্ত হয়ে দুটি ক্রোমোটিড
গঠণ করে।
এগুলো সেন্ট্রামিয়ার নামক একটি বিন্দুতে যুক্ত থাকে।
উদ্ভিদের
বর্ধনশীল অংশে ভাজক টিস্যু যেমনঃ কান্ড, মূলের
অগ্রভাগ, ভ্রুণমুকুল, বর্ধনশীল
পাতা, মুকুল ইত্যাদিতে মাইটোসিস কোষ বিভাজন ঘটে। এ
প্রক্রিয়ায় মাতৃকোষের নিউক্লিয়াসটি একবার বিভাজিত হয়ে সমআকৃতির, সমগুণ সম্পন্ন ও সমসংখ্যক ক্রোমোজোম বিশিষ্ট দুটি অপত্য কোষ সৃষ্টি
করে।
এ
ধরনের বিভাজনে প্রতিটি ক্রোমোজোম লম্বালম্বিভাবে দুইভাগে বিভক্ত হয়। ফলে সৃষ্ট
নতুন কোষ দুটিতে ক্রোমোজোম সংখ্যা মাতৃ কোষের ক্রোমোজোম সংখ্যার সমান থাকে।
এভাবে
কোষ বিভাজনের দীর্ঘস্থায়ী ধাপ প্রোফেজ উদ্ভিদের বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।
১
নং প্রশ্নের উত্তর
– ঘ
উদ্দীপকে
মায়ের বলা প্রক্রিয়াটির নাম হল অভিস্রবন প্রক্রিয়া।
যে
প্রক্রিয়ায় একই পদার্থের কম ঘনত্ব এবং বেশি ঘনত্বের দ্রবণ অর্ধভেদ্য পর্দা দ্বারা পৃথক
করা হলে দ্রাবক পদার্থের অণুগুলো কম ঘনত্বের দ্রবণ থেকে অধিক ঘনত্বের দ্রবণের দিকে
যায় তাকে অভিস্রবণ বলে।
উদ্ভিদ
জীবনে অভিস্রবন প্রক্রিয়ার গুরুত্ব:
পানিতে
দ্রবীভূত বিভিন্ন খনিজ লবণ অভিস্রবন প্রক্রিয়ায় উদ্ভিদের কোষের মধ্যে প্রবেশ করে
বা বাইরে আসে।
উদ্ভিদ
এককোষী মূলরোম দিয়ে অভিস্রবন প্রক্রিয়ায় মাটি থেকে পানি ও পানিতে দ্রবীভূত খনিজ
লবণ শোষণ করে।
অভিস্রবনের
কারণে রসস্ফীতি ঘটে, ফলে উদ্ভিদের কান্ড ও
পাতা সতেজ ও খাড়া থাকে।
পত্ররন্দ্র
খোলা বা বন্ধ হওয়া অভিস্রবন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।
উদ্ভিদের
অভ্যন্তরে এক কোষ হতে অন্য কোষে পানি চলাচল, কোষের
বৃদ্ধি, কোষের স্বাভাবিক আকার ও আকৃতি ঠিক রাখা, কোষের দৃঢ়তা প্রদান, মাটি হতে রস উত্তোলন,
বীজের অঙ্কুরোদগম প্রভৃতিতে অভিস্রবন প্রক্রিয়া বিশেষ ভূমিকা
পালন করে।
সুতরাং
দেখা যাচ্ছে যে, উদ্ভিদ অভিস্রবন প্রক্রিয়া দ্বারা
সার্বিক শরীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়াগুলো নিয়ন্ত্রণ করে। তাই অভিস্রবন প্রক্রিয়াটি
উদ্ভিদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কোন মন্তব্য নেই